কলকাতা 

Adhir Chowdhury vs Mamata Banerjee: ‘আপনার সরকার এক দশক ক্ষমতায় থাকার পরেও এ রাজ্যে মুসলিম সমাজ প্রান্তিক, বঞ্চিত ও অবহেলিত’মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে বললেন অধীর চৌধুরী, অধীরকে পাল্টা কটাক্ষ সিদ্দিকুল্লাহর

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়নে তেমন কোন কাজ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বহরমপুরের সাংসদ তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। শুধু অভিযোগ করেই তিনি থেমে থাকেননি সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে তিনি চিঠি দিয়ে এই অভিযোগ করেছেন। যদিও অধীর রঞ্জন চৌধুরী এই চিঠির উত্তর মুখ্যমন্ত্রী দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই তবে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী অধীর রঞ্জন চৌধুরী কে কটাক্ষ করেছেন। গত শনিবার অধীর চৌধুরী এই চিঠি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।

মমতাকে লেখা চিঠিতে অধীর লিখেছেন, ‘আপনার সরকার এক দশক ক্ষমতায় থাকার পরেও এ রাজ্যে মুসলিম সমাজ প্রান্তিক, বঞ্চিত ও অবহেলিত।… এই চিঠি মারফত আপনাকে (মুখ্যমন্ত্রী) জানাচ্ছি, পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিম সমাজ দুঃখজনক ও খারাপ অবস্থায় রয়েছে। জাতীয় এবং রাজ্য স্তরে সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য অনেক ভাল ভাল প্রকল্প রয়েছে। প্রতি বছর সংখ্যালঘু উন্নয়নে নতুন নতুন প্রকল্প তৈরি হচ্ছে। কিন্তু কোনওভাবেই সেগুলি তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে তাঁদের সামজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে না।’

Advertisement

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমাদের রাজ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যালঘু উন্নয়ন কমিশন রয়েছে। তাদের কাজ, সংখ্যালঘুদের প্রকৃত উন্নয়ন হচ্ছে কিনা বা তাদের কাছে সমাজকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি পৌঁচ্ছচ্ছে কিনাতা দেখার।’ অধীরের দাবি, ‘পাঁচবার সাংসদ হওয়ার ভিত্তিতে আমি লক্ষ করেছি রাজ্যের সংখ্যালঘু দফতর ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন কমিশন কোনও কাজ করছে না।’

চিঠিতে অধীর দাবি করেছেন, যে বহরমপুর কেন্দ্র থেকে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে ৭০ শতাংশ মানুষ সংখ্যালঘু। সেখানে কাজের অভাবে দক্ষ শ্রমিকেরা পরিযায়ী হিসেবে ভিন্‌ রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন। সেই সব রাজ্য সুন্দর করে গড়ে তুলতে তাঁদের শ্রম বিনিয়োগ করছেন।

অধীরের চিঠির জবাবে রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ বলেন, ‘‘অধীর চৌধুরী কোনও একটি ঘটনার কথা বলতে পারেন। কিন্তু ৫০ থেকে ৭০ বছর ধরে মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরের মানুষেরা ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যান। এটা কোনও নতুন বিষয় নয়।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘৭০ বছরের জঞ্জাল ১০ বছরে যায় না। বিধানচন্দ্র রায়, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, বামফ্রন্ট সরকারের ৩৪ বছর ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ১০ বছরে সংখ্যালঘুদের জন্য কাজকে অধীরবাবু পৃথক চারটি টেবিলে রাখলেই বুঝতে পারবেন। মুখে অনেক কথা বলা যায়। লেখাও যায়। কিন্তু তথ্য পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখলে অধীরবাবু এমন কথা বলতে পারতেন না।’’

তবে মাওলানা সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী যাই বলুক না কেন এটা স্পষ্ট এই রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজ মমতা সরকারের প্রতি দিন দিন আস্থা হারাচ্ছে। কলকাতায় বসে মন্ত্রীর চেয়ার রক্ষার তাগিদে অনেক কথা বলা গেলেও বাস্তব অন্য কথা বলছে। বিশেষ করে তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজকে নিয়ে যে ছেলে খেলা চলছে তা এই রাজ্যের সংখ্যালঘুর সমাজ মেনে নিতে পারছে না। সাম্প্রতিককালের কয়েকটি নির্বাচনে এটা স্পষ্ট হয়েছে এই রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজ ধীরে ধীরে মমতার প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করছে। শুধু বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচন নয় মনে রাখতে হবে এই রাজ্যের সদ্যসমাপ্ত পৌরসভার নির্বাচনেও  মুসলিম ভোট তৃণমূলের কাছ থেকে অনেকটাই সরে গেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যদি সংখ্যালুঘুদের ক্ষোভ প্রশমন করতে না পারে তাহলে আগামী দিনে তৃণমূলের জন্য বিপর্যয়ই অপেক্ষা করছে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ